ওয়াজের শুরুতে কি বলতে হয়

Spread the love

ওয়াজের শুরুর সম্পূর্ণ নমুনা

(বিষয়: নামাজের গুরুত্ব)

(বক্তা মঞ্চে এসে শান্ত ও স্থিরভাবে দাঁড়াবেন এবং মাইক্রোফোন ঠিক করে নেবেন।)

১. ভূমিকা: খুতবাতুল হাজাহ (প্রয়োজনীয় খুতবা)

(গভীর, সুস্পষ্ট ও ধীর স্বরে শুরু করবেন)

“আ’ঊযুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজীম।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।”

“ইন্নাল হামদা লিল্লাহি, নাহমাদুহু ওয়া নাসতা’ঈনুহু ওয়া নাসতাগফিরুহ। ওয়া না’ঊযুবিল্লাহি মিন শুরূরি আনফুসিনা ওয়া মিন সাইয়্যিআতি আ’মালিনা। মান ইয়াহদিহিল্লাহু ফালা মুদিল্লা লাহ, ওয়া মান ইউদলিল ফালা হাদিয়া লাহ।”

(অর্থ: নিশ্চয়ই সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। আমরা তাঁরই প্রশংসা করি, তাঁর কাছেই সাহায্য চাই এবং তাঁর কাছেই ক্ষমা চাই। আমরা আমাদের আত্মার অনিষ্ট এবং আমাদের মন্দ কাজ থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই। আল্লাহ যাকে পথ দেখান, তাকে কেউ পথভ্রষ্ট করতে পারে না। আর যাকে তিনি পথভ্রষ্ট করেন, তাকে কেউ পথ দেখাতে পারে না।)

“ওয়া আশহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহ, ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহ। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ‘আলা আলিহি ওয়া আসহাবিহি ওয়া সাল্লামা তাসলিমান কাসিরা।”

(অর্থ: আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য উপাস্য নেই, তিনি এক, তাঁর কোনো অংশীদার নেই। এবং আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ (ﷺ) তাঁর বান্দা ও রাসূল। আল্লাহ তাঁর উপর, তাঁর পরিবার এবং তাঁর সাহাবীদের উপর শান্তি ও অসংখ্য রহমত বর্ষণ করুন।)

“আম্মা বা’দ।” (অর্থ: অতঃপর,)

২. প্রশংসা, দরুদ ও সম্ভাষণ

“সমস্ত প্রশংসা সেই মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের জন্য, যিনি আমাদেরকে অত্যন্ত দয়া করে, মায়া করে আজকের এই কোরআনের মাহফিলে আসার এবং বসার তৌফিক দান করেছেন। আমরা সকলে অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে কালিমাতুশ শোকর আদায় করে পড়ি- আলহামদুলিল্লাহ।”

(একটু থেমে)

“অগণিত দরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক বিশ্ব মানবতার মুক্তির দূত, সাইয়্যিদুল কাওনাইন, আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) এর উপর। আমরা সকলে ভক্তি ও ভালোবাসার সাথে পড়ি- সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।”

“উপস্থিত আজকের এই মোবারক মাহফিলের সম্মানিত সভাপতি, মঞ্চে উপবিষ্ট আমার শ্রদ্ধেয় ওলামায়ে কেরাম, আমার সামনে উপবিষ্ট বিভিন্ন বয়সের ইসলামপ্রিয় মুসলিম ভাই ও বাবাজানেরা, এবং পর্দার আড়ালে অবস্থানরত আমার সম্মানিতা মা ও বোনেরা। আপনাদের সকলের প্রতি রইলো আমার আন্তরিক মোবারকবাদ ও ইসলামিক সম্ভাষণ- আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।”

৩. বিষয়বস্তু উপস্থাপন ও মূল আলোচনা শুরু

“প্রিয় দ্বীনি ভাইয়েরা, আজকে আমি আপনাদের সামনে ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি স্তম্ভ, অর্থাৎ ‘নামাজের গুরুত্ব’ নিয়ে কিছু কথা বলার জন্য উপস্থিত হয়েছি। ওয়া মা তাওফিকি ইল্লা বিল্লাহ।”

“এ বিষয়ে মহান আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কোরআনুল কারিমের সূরা আল-আনকাবুতের ৪৫ নম্বর আয়াতে ইরশাদ করেন:”

  • আরবি:
  • বাংলা উচ্চারণ:”ইন্নাছ সালা-তা তানহা ‘আনিল ফাহশা-ই ওয়াল মুনকার।”
  • অর্থ:”নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে।” (সূরা আল-আনকাবুত, আয়াত: ৪৫)

“সুবহানাল্লাহ! এই আয়াতে আল্লাহ তা’আলা নামাজের একটি বিশেষ গুণের কথা উল্লেখ করেছেন। নামাজ শুধু একটি ইবাদতই নয়, বরং এটি মানুষকে যাবতীয় পাপ কাজ থেকে রক্ষা করার এক মহৌষধ।”

“নামাজের গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) ইরশাদ করেছেন:”

  • হাদিস:”আস-সালাতু ইমাদুদ-দীন”
  • অর্থ:”নামাজ হলো দ্বীনের (ধর্মের) খুঁটি।”

“এর অর্থ হলো, একটি ঘরের ছাদ যেমন খুঁটি ছাড়া দাঁড়াতে পারে না, ঠিক তেমনি ইসলাম নামক এই দ্বীনটিও নামাজ নামক খুঁটি ছাড়া টিকতে পারে না। যার নামাজ নেই, তার দ্বীন নেই।”

“সম্মানিত ভাইয়েরা, আসুন আমরা এই আয়াত ও হাদিসের আলোকে বিস্তারিতভাবে জানার চেষ্টা করি, কেন আমাদের জীবনে নামাজ এত জরুরি এবং কীভাবে এই নামাজ আমাদের জীবনকে বদলে দিতে পারে…”

(এরপর বক্তা নামাজের গুরুত্ব, উপকারিতা, নামাজ না পড়ার শাস্তি এবং নামাজে মনোযোগী হওয়ার উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা শুরু করবেন।)

Leave a Comment

Scroll to Top