“মাইকের সামনে আসার পর আপনি প্রথমে কী বলেন, সেটাই বলে দেয় আপনি কতটা প্রস্তুত।”
একজন দক্ষ বাগ্মীর জন্য বক্তব্যের শুরুটা একদম মঞ্চের মেজাজ ঠিক করে দেয়। আপনি হাদীস, কুরআনের তাফসির বা সমাজের ইসলামিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বলুন না কেন—শুরুর ৩০ সেকেন্ডই আপনার শ্রোতার মন জয় করার সোনালী সময়।
তাহলে প্রশ্ন উঠেই—ইসলামিক বক্তব্য শুরুতে কি বলতে হয়?
চলেন, সহজ ভাষায়, কিছু চমৎকার শুরু বাক্য ও পরামর্শ দেখে নেওয়া যাক।
১. বিসমিল্লাহ-তে বরকত আনুন
“বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম”
এটাই তো আমাদের সব কাজের শুরু। বক্তব্যও ব্যতিক্রম না। এটা শুধু ইসলামি সৌন্দর্যের প্রকাশই না, বরং শ্রোতাদের মনে প্রথমেই একটা পরিপূর্ণ আধ্যাত্মিক আবহ তৈরি করে।
২. সালাম দিয়ে শুরু করাই সুন্নত
“আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ”
শ্রোতাদের সালাম দেয়া মানেই একধরনের সম্পর্ক তৈরি করা। আর বিশ্বাস করুন, প্রথমেই একটা হাসিমাখা সালাম দিলে শ্রোতারা আপনাকে মন খুলে শুনবে।
৩. আলহামদুলিল্লাহ বলুন – কৃতজ্ঞতার চাবিকাঠি
“আলহামদুলিল্লাহ, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর যিনি…”
বক্তব্যের শুরুতে আল্লাহর প্রশংসা করলে আপনার কথায় আস্থা বাড়ে। এটি কৃতজ্ঞতার প্রকাশ, আর কৃতজ্ঞ মানুষ সবসময়ই শ্রোতাদের মনে ভালোবাসা অর্জন করে।
৪. দরুদ পাঠ – নবীর প্রতি ভালোবাসার প্রমাণ
“আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদ…”
নবীর উপর দরুদ পাঠ করলে শুধু আপনি বরকত অর্জন করছেন না—শ্রোতারাও শান্তি পাচ্ছেন। একে বলাই যায়—মিস্টি শুরু।
৫. হালকা Introduce দিন (কিন্তু খুব সংক্ষেপে!)
নিজেকে পরিচয় করাতে পারেন, তবে যেন তা “আমাকে দেখো!” টাইপ না হয়। উদাহরণস্বরূপ—
“আমি একজন সাধারণ দীন-অন্বেষণকারী। আজকের আলোচনায় আমরা জানব কিভাবে কুরআনের আলোতে জীবন গঠন করা যায়।”
৬. আয়াত বা হাদীস দিয়ে শুরু করা দারুণ স্ট্র্যাটেজি
শুরুতেই কুরআনের একটা আয়াত বা প্রাসঙ্গিক হাদীস তুলে দিন। যেমন—
“ইন্নামাল আ’মালু বিন্নিয়্যাত”—আমল তো নিয়তের উপর নির্ভর করে।
Insert image of an Islamic calligraphy of “Bismillah” here.
৭. শ্রোতাদের উদ্দেশে একটি হালকা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিন
“ভাই ও বোনেরা, কখনও কি ভেবে দেখেছেন, আমরা দিনের কতটুকু আল্লাহর জন্য ব্যয় করি?”
এই টেকনিকটা শ্রোতাদের ভাবনার জগতে নিয়ে যায়। মনোযোগ পাকা।
৮. আধুনিক বাস্তবতার সঙ্গে সংযোগ দিন
“আমাদের সমাজে অনলাইন দুনিয়া কতটা দখল করে নিচ্ছে, ভেবে দেখেছেন?”
আপনি যদি বাস্তবতা ধরে ধরে ইসলামিক দৃষ্টিকোণ আনেন, তবে শ্রোতার সঙ্গে এক ধরণের “রিলেটেবল” সংযোগ তৈরি হয়।
৯. কথা শুরু করার আগে একটু থেমে যান
হ্যাঁ, “পজ” করার কৌশল খুবই কার্যকর। কথা বলার আগে কয়েক সেকেন্ড চুপ থেকে চোখ বুলিয়ে নিন শ্রোতাদের উপর। উত্তেজনা তৈরি করে, এবং সবাই আপনার দিকে মনোযোগ দেয়।
১০. নিয়ত ঠিক করে শুরু করুন
নিজের মনে মনে বলুন—“আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই এই বক্তব্য দিচ্ছি।” ভিতরের শক্তি দ্বিগুণ হবে।
✨ উপসংহার:
বক্তব্যের শুরুটা যদি ভালো হয়, তাহলে শেষটা নিজেই নিজের পথ খুঁজে নেয়। আপনি যদি ভবিষ্যতের একজন সফল ইসলামিক বক্তা হতে চান, তাহলে এসব ছোট ছোট বিষয়েই মন দিন।
আপনার বক্তব্য শুরুতে আপনি কী বলেন? নিচে কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না!
আর যদি এই লেখা ভালো লেগে থাকে, তবে শেয়ার করে আরেকজন বাগ্মীকে সাহায্য করুন। 😊
আমি একটি আইটি ফার্মের রিলেশনশীপ অফিসার। আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ করছি। অবসর সময়ে লেখালেখি করি।